১৯৪৭-এর বাংলা ভাগ : বাংলাদেশের লাভ-ক্ষতি
ব্রিটিশ শাসন শেষ হওয়ার প্রাক্কালে ভাগ করা হয় ভারতবর্ষের অন্যতম দুটি প্রদেশ বাংলা ও পাঞ্জাবকে। বাংলা ভাগ হয়ে একাংশ হয় পূর্ব বাংলা, আরেক অংশ হয় পশ্চিম বাংলা। বাংলায় সে সময় সর্বমোট ২৮টি জেলা ছিল (আসামের সিলেটসহ ধরলে ২৯টি জেলা)। যার মধ্যে ১৭টি জেলা ছিল মুসলিম অধ্যুষিত এবং বাকি ১২টি জেলা হিন্দু এবং বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ।
★ মুসলিম অধ্যুষিত জেলা :
দিনাজপুর, রংপুর, মালদা, মুর্শিদাবাদ, রাজশাহী, বগুড়া, পাবনা, ময়মনসিংহ, নদিয়া, ঢাকা, ফরিদপুর, যশোর, বাকেরগঞ্জ (বরিশাল), নোয়াখালি, ত্রিপুরা (কুমিল্লা), চট্টগ্রাম, সিলেট [আসাম]।
★ হিন্দু অধ্যুষিত জেলা :
কলকাতা, হাওড়া, হুগলী, বীরভূম, চব্বিশ পরগণা, বাঁকুড়া, বর্ধমান, মেদিনীপুর, দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, খুলনা।
★ বৌদ্ধ অধ্যুষিত জেলা :
পার্বত্য চট্টগ্রাম।
কিন্তু চূড়ান্ত ভাগের সময় মুসলিম অধ্যুষিত বেশ কিছু জেলা বাংলাদেশকে (তৎকালীন পূর্ব বাংলা) না দিয়ে দেয়া হয় পশ্চিমবঙ্গ ও আসামকে। অপরদিকে হিন্দু ও বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ কিছু জেলাও পশ্চিমবঙ্গের ভাগে না এসে অন্তর্ভুক্ত হয় পূর্ব বাংলার (বাংলাদেশ) সাথে।
চূড়ান্ত ভাগ :
★ তৎকালীন পূর্ব বাংলা :
পূর্ব দিনাজপুর, রংপুর, রাজশাহী, বগুড়া, পাবনা, ময়মনসিংহ, সিলেট (বরাক উপত্যকা ছাড়া), পূর্ব নদিয়া (কুষ্টিয়া + মেহেরপুর + চুয়াডাঙ্গা জেলা), ঢাকা, যশোর (বনগাঁও এবং গাইঘাটা থানা ব্যতীত), ফরিদপুর, বাকেরগঞ্জ, নোয়াখালি, ত্রিপুরা (কুমিল্লা), চট্টগ্রাম, খুলনা এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম।
★ পশ্চিম বঙ্গ :
কলকাতা, হাওড়া, হুগলী, বীরভূম, বাঁকুড়া, বর্ধমান, মেদিনীপুর, মালদা, মুর্শিদাবাদ, পশ্চিম দিনাজপুর, পশ্চিম নদিয়া (কৃষ্ণনগর + রানাঘাট), দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, যশোর জেলার বনগাঁও এবং গাইঘাটা মহকুমা। এছাড়াও সিলেট জেলার করিমগঞ্জ মহকুমা আসাম রাজ্যের সাথে যুক্ত হয়।
চূড়ান্ত ভাগে দেখা যাচ্ছে, ধর্মের ভিত্তিতে ভাগ হওয়ার কথা থাকলেও পুরোপুরি ধর্মের ভিত্তিতে ভাগ হয়নি বাংলা! কিন্তু কিন্তু কী কারণে এমন নাটকীয় পরিবর্তন হয়, পিছনের ঘটনাগুলো একবার দেখে নেয়া যাক।
* মুসলিম প্রধান নিম্নলিখিত জেলাগুলো প্রাথমিক পর্যায়ে বাংলাদেশের (পূর্ব বাংলা) অন্তর্ভুক্ত হলেও ১৭ আগস্ট রাতে এই জেলাগুলোকে পশ্চিম বাংলার কাছে হস্তান্তর করা হয়। জেলাগুলো হলো :
i) মুর্শিদাবাদ ;
ii) মালদহ
iii) নদীয়া (পশ্চিম অংশ)
iv) দিনাজপুর (পশ্চিম অংশ)
v) যশোর (বনগাঁও এবং গাইঘাটা)
মূল লিখাঃ সাইফুদ্দিন আহমেদ | Aug 14, 2021, অন্য দিগন্ত ।